স্বদেশ ডেস্ক:
আফগানিস্তানের কান্দাহার ও হেরাটে ভারতীয় দূতাবাসে লুটপাট চালিয়েছে তালেবানরা। কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানানো হয়েছে, এই দুই শহরের দূতাবাস থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া দূতাবাসের সামনে থাকে তারা গাড়িও ছিনতাই করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে ভারতের চারটি দূতাবাস রয়েছে। কাবুল ছাড়াও কান্দাহার, হেরাট ও মাজার-ই-শরিফে ভারতের দূতাবাসগুলো কাজ করে। তালেবান ক্ষমতা দখল করার আগে থেকেই অশান্তির আঁচ পেয়ে এই দূতাবাসগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর গত মঙ্গলবার কাবুল থেকে ১৭০ জনকে উদ্ধার করে ভারত। উদ্ধার করা হয় ভারতের রাষ্ট্রদূত, দূতাবাসের কর্মী ও সেই সব ভারতীয়দের, যারা আফগানিস্তানের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন। উদ্ধার করা হয় ভারতীয় সাংবাদিকদেরও। যদিও এখনো আফগানিস্তানে বেশ কয়েকজন ভারতীয় আটকে রয়েছেন।
কাবুল দখলের পর থেকে শহরের প্রায় প্রতি দরজায় হানা দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে তালেবান। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, জাতিসংঘের এক নথিতে বলা হয়েছে, নানা মাধ্যমে জানা গেছে তালেবান একটি তালিকা তৈরি করেছে। মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর হয়ে কাজ করেছেন, এমন আফগানদের নাম রয়েছে তালেবানদের তালিকায়। তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজনে শাস্তি দিতে চায় তালেবান।
নথিতে আরও বলা হয়, যারা ইতিমধ্যে পালিয়ে গেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, নিজে থেকে ধরা না দিলে পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হবে। এমনকি তালেবানের পক্ষ থেকে অনেকে হত্যার হুমকিও পেয়েছেন। যদিও কাবুল দখলের পর বিদেশি বাহিনীদের সহায়তাকারী আফগানদের ক্ষমা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল তালেবান।
এর আগে গত মঙ্গলবার প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। এ সময় তার কাছে বিদেশি বাহিনীগুলোর জন্য এত দিন যারা দোভাষী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।
জবাবে জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ‘কাউকেই শত্রু হিসেবে গণ্য করা হবে না। যেসব তরুণ এখানে বড় হয়েছে, আমরা তাদের ছাড়তে চাই না। তারা আমাদের সম্পদ। কেউ তাদের দরজায় টোকা দিয়ে জানতে চাইবে না তারা কার জন্য কাজ করেছে। তারা নিরাপদে থাকবে। কেউ তাদের জেরা বা তাড়া করবে না।’
এ বিষয়ে আফগানিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূত রুদ্রেন্দ্র ট্যান্ডোন জানিয়েছেন, ২০০ জনকে শেষ তিনদিনে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদেরও ফিরিয়ে আনা হয়েছে।